শহরের ডাক
এই শহর প্রতিটা মুহূর্তে বলে,
“এখানে পড়ে আছিস কিসের আশায়?
তোর জায়গা এখানে নয়,
চলে আয় নগরীতে!”
এ শহর জানে না ছোটো গলির একলা রাত,
জানে না ঘাসফড়িঙের ডানা ঝাপটানোর শব্দ,
শুনতে পায় না শুকনো পাতার মৃদু কান্না।
সে চায় কাঁচের দালানের আলো,
তার ইটের শরীরে নেই কোনো শেকড়ের স্মৃতি।
সে শুধু বলে,
“তোর স্বপ্ন বড় হোক,
তোর চলার গতি বাড়ুক,
তুই চলে আয় নগরীতে!”
কিন্তু জানে কি শহর?
আমার স্বপ্ন কুয়াশার মতো ভোরে গলে যায়,
আমার পথ নদীর ধারের নরম ঘাস,
আমার গতি হাওয়ার সঙ্গে মিলেমিশে থাকা।
নগরীর ব্যস্ততা আমায় ডাকে,
তবু আমি পড়ে থাকি এই চেনা রাস্তায়,
যেখানে বিকেলের আকাশে এখনো রঙের খেলা,
যেখানে রোদ পোহানো বুড়োর মুখে গল্প জমে থাকে।
নগরী জানে না সাঁঝের আলোর মায়া,
সে জানে নীল সিগন্যাল আর ধোঁয়ার রেখা,
সে চেনে ক্লান্ত চোখ আর ব্যস্ত পায়ের শব্দ।
সে বোঝে অর্থ, বোঝে লেনদেন,
সে জানে সাফল্যের দামে কীভাবে বিক্রি হয় সকাল-বিকেল।
তাই তো বারবার বলে,
“চলে আয় নগরীতে!
তুই কেন পরে আছিস এখানে?”
কিন্তু এই শহরই তো আমার প্রথম ভালোবাসা,
এই বাতাসই তো আমার ফেলে আসা দিনগুলোর সাক্ষী।
আমি কি পারি ফেলে যেতে পুরনো জানালার আলো,
রাস্তার পাশে বসে থাকা চায়ের দোকান,
অকারণ হাঁটতে হাঁটতে হারিয়ে যাওয়ার মুহূর্ত?
নগরী হয়তো আমাকে ডাকবে হাজারবার,
তবু আমি পড়ে থাকব এই শহরের আকাশের নিচে,
কারণ এখানে আমার শেকড়,
এখানে আমার শ্বাস।
কলমে: ধার্মিক
Discover more from DHARMIK (ধার্মিক)
Subscribe to get the latest posts sent to your email.