দিশাহীনতার ঠিকানা

দিশাহীনতার ঠিকানা
এ-ই তো আর কিছুক্ষণ, ওহে দিশেহারা মন!
সময় কি কখনও অপেক্ষা করে? নদীর মতন বয়ে যায়, ক্ষয় হতে থাকে তীর, আর আমরা দাঁড়িয়ে থাকি মাঝপথে—দোলাচলে, দ্বিধায়। তবু থামতে পারি না, থামা মানেই তো হার!
তুমি স্যাঁতসেঁতে মাটির স্বাদে খুঁজে নিও দিশা।
পৃথিবী কখনও কাঁদে, কখনও হাসে। সে কখনও বিদ্রোহী, কখনও মা, কখনও প্রেমিকা। তার বুকের গভীরে চাপা পড়ে থাকে অসংখ্য গল্প—শোকের, আনন্দের, প্রতীক্ষার। শিকড়ের মতো সে আঁকড়ে ধরে তার সন্তানদের, আবার সময় এলেই বিদায়ও জানায়। দিশাহীনতার মাঝে এই মাটি, এই পৃথিবীই তো একমাত্র আশ্রয়!
তুমি কি জানো, মন?
যে পথ তুমি খুঁজছ, সে পথ কি আদৌ আছে? নাকি তা শুধু এক মরীচিকা? আমরা কতো দূর হাঁটি, কতো স্বপ্ন দেখি, কতো বাস্তবতা বয়ে নিয়ে চলি, তবু কেন যেন শেষ মাথায় পৌঁছাতে পারি না। পথ ফুরিয়ে আসে, কিন্তু গন্তব্য তখনও অধরা! তবু তো এগোতে হবে, পাড়ি দিতে হবে এই পার্থিব পথ।
তুমি পার্থিব পথের বিবেকে ঘটা কেয়ামত ভুলে যেও।
জীবন তো এক আশ্চর্য নাটক! এখানে প্রতিদিনই এক নতুন দৃশ্য, এক নতুন সংলাপ। সুখ আসে, দুঃখও আসে, আমরা মেনে নিই, মানিয়ে নিই। কিন্তু কেয়ামত? সেটাই তো আমাদের ভয়! বড় বড় শহরগুলো একদিন মাটির সাথে মিশে যাবে, মানুষগুলো কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে, কিন্তু জীবন থেমে থাকবে না। সময়ের স্রোত কখনও থেমে না।
ভুলে যেও ভুল আর জীবনের ঘোর অমানিশা।
অন্ধকার আছে বলেই তো আলো এত সুন্দর! ভুল আছে বলেই তো শুদ্ধতা খোঁজার এত আকাঙ্ক্ষা! তোমার জীবনে যত রাতই আসুক, মনে রেখো, প্রতিটি রাতের পরে আসে ভোর। প্রতিটি দুঃখের পরে আসে নতুন এক সম্ভাবনা। জীবন মানেই তো এই পথচলা, খুঁজে ফেরা, বারবার হারিয়ে গিয়েও নতুন করে দিশা খুঁজে পাওয়া।
তাই, ওহে দিশেহারা মন, থেমে যেও না!
এই পথের ধুলো তোমার সঙ্গী, এই আকাশ তোমার স্বপ্নের ছায়া। খুঁজে নাও তোমার ঠিকানা, খুঁজে নাও তোমার দিশা—শ্যামল মাটির বুকেই!
কলমে : ধার্মিক

Discover more from DHARMIK (ধার্মিক)

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top

Discover more from DHARMIK (ধার্মিক)

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading