“ওদের জন্য বসন্ত”
ওইযে যারা রোজ ভেঙেও আবার হেসে সামলে ওঠে, ওদের জন্যই বসন্ত একটু বেশি রঙিন হয়।
পলাশের ডালে দু-একটা ফুল বাড়তি ফোটে, যেন প্রকৃতিও জানে—ওরা ভালো থাকার যোগ্য।
ওরা দুঃখের দেয়ালে হাত রেখে স্বপ্ন আঁকে, চোখের জলে আগুন জ্বালিয়ে আলোর পথ খোঁজে।
শহরের ব্যস্ত মোড়ে, গ্রামের কাদামাখা পথের ধারে, কিংবা কোনো নির্জন বারান্দায়—ওদের দেখা মেলে।
যাদের গল্প কেউ শোনে না, যাদের কান্না রাতের হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, তারাই কিন্তু নতুন ভোরের রঙ বোনে।
আকাশে যত রোদ, বৃষ্টিতে যত সুর, নদীর যত ঢেউ—সব যেন ওদের বুক থেকে উঠে আসে।
যে মা সারাদিন পরিশ্রম করে রাতের আঁধারে সন্তানের কপালে হাত রাখেন,
যে বাবা নিজের ইচ্ছে-অনিচ্ছের হিসেব না করেই সংসারের ঘড়িটাকে সচল রাখেন,
যে তরুণ স্বপ্ন দেখে আবারও উঠে দাঁড়ানোর,
যে মেয়ে নিজের স্বপ্নকে আগলে রেখে লড়াই করে প্রতিদিন—ওদের জন্যই বসন্ত আসে।
বসন্ত জানে, যারা কষ্টের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকেও ভালোবাসতে জানে,
তারা প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর রঙের দাবিদার। তাই ফাগুনের বাতাস ওদের গায়ে একটু বেশি রোদ মাখিয়ে দেয়,
কোকিলের ডাক ওদের মন ছুঁয়ে যায় অন্যরকম সুরে।
ওরা জানে, জীবন কেবল সুখের গল্প নয়, কেবল ফুলের মঞ্চ নয়—তাতে কাঁটাও আছে, তাতে ঝড়ও আছে।
তবু ওরা হাসতে জানে, সামনে তাকাতে জানে।
এই পৃথিবী টিকে আছে ওদের জন্যই।
যে মানুষ রোজ ভাঙে, তবু ভালো থাকার পথ খোঁজে, সে-ই প্রকৃত বীর।
আর বসন্ত? বসন্ত ওদের কাছে একটু বেশি ঋণী। তাই দু-একটা পলাশ বাড়তি ফোটে—শুধু ওদের জন্যই।
কলমে : ধার্মিক
Discover more from DHARMIK (ধার্মিক)
Subscribe to get the latest posts sent to your email.